Customize Consent Preferences

We use cookies to help you navigate efficiently and perform certain functions. You will find detailed information about all cookies under each consent category below.

The cookies that are categorized as "Necessary" are stored on your browser as they are essential for enabling the basic functionalities of the site. ... 

Always Active

Necessary cookies are required to enable the basic features of this site, such as providing secure log-in or adjusting your consent preferences. These cookies do not store any personally identifiable data.

দীপক মজুমদার-এর অনুবাদে বব ডিলান

ডিলান-এর সময় : নি উ ই য় র্ক  শ হ রে  দুঃ স ম য়

বাবু-বিবিরা আসুন, গান শুনে যান আমার। ঠিকঠাকই গাইব, তবু খটকা লাগতে
পারে হয়তো। আপনাদের সক্কলের যা জানা, তারই একটুকরো শোনাব। নিউ ইয়র্ক টাউনে বাঁচা আর সেই বাঁচার দুঃসময়। পুরনো শহরটা দারুণ। ঠিক চক্ষুর মতো। ওয়াশিংটন হাইটস থেকে হার্লেম অব্দি। চারদিকে গিজগিজ করছে মানবসমাজ, উঠতে চাইলে লাথি মারবে আর নিচে পড়ে থাকলে গাঁট্টা। নিউ ইয়র্ক টাউনে বাঁচা আর সেই বাঁচার দুঃসময়।

গোল্ডেন গেট থেকে রকেফেলার চত্বর কিংবা এম্পায়ার স্টেট-টি বহুৎ দূরের পথ। বাবু রকেফেলার ওড়েন প্রায় পাখির মতোই, আকাশে। আর বৃদ্ধ এম্পায়ারবাবু তো রা-ই কাড়েন না। নিউ ইয়র্ক টাউনে বাঁচা আর সেই বাঁচার দুঃসময়।

ভোরে উঠে কাজ খুঁজতে বেরোও, ঠায় দাঁড়িয়ে থেকে পায়ে বেদনা উঠবে। অঢেল পয়সা থাকলে আহ্লাদে আটখানা, নয়তো পকেটে যদি একটাই ঠনঠনে নিকেল, তবে স্টেটন দ্বীপের ফেরি ধরো। নিউই টাউনে বাঁচা আর বাঁচার দুঃসময়।

মিস্টার হাডসন বইছেন তরতরিয়ে আর মিস্টার মিনুয়ে দিয়েছেন তাঁর স্বপ্নের দাম। উনি যেমন কিনেছিলেন এই শহর, আমি তেমনি বেচে দেব ভাবছি এটা।
নিউ ইয়র্ক টাউনে বাঁচার দুঃসময়।

ক্যালিফর্নিয়ার ধোঁয়াশা ঢের ভালো, রকি মাউন্টেন ওকলাহোমার ধুলো। খবরটা ছড়িয়ে দিন, আমার গপ্পোগান শুনে যান। যা ইচ্ছে করতে পারেন, ইচ্ছে হলে কাদা ছিটোন, মারধরও চলতে পারে। নিউ ইয়র্ক ছাড়লে আমি কিন্তু নিজের পায়ে খাড়া।

 

ডিলান-এর পরিচয় : এ ক  ভ ব ঘু রে  হো বো

রাস্তা দিয়ে হাঁটতে-হাঁটতে একদিন, এক কোণে, দরজায় গোড়ায় শুয়ে আছে দেখি, এক বুড়ো ভবঘুরে হোবো। ঠাণ্ডা ফুটপাথে মুখ গোঁজা, মনে হয় সারাটা রাতই কেটেছে এ ভাবে। কেবল এক হোবো, আরেক জন যে গেল।

এমন কাউকে রেখে গেল না, যে তার করুণ গান গাইবে, পৌঁছে দেবে বাড়ি অব্দি। খবরের কাগজে মাথা ঢাকা। উঁচু ধারটা বালিশ আর রাস্তাটাই ওর বিছানা। মুখে ভাসছে দীর্ঘ পথের ছবি। এক মুঠো পয়সা, কোত্থেকে হাতিয়েছে বুঝি। কেবল এক হোবো, আরেক জন যে গেল।

পুরো জীবনটাই ধসে পড়া– মানুষের কি সয়? মাটির গর্ত-ফোকর দিয়ে জগৎটাকে দেখা? খঞ্জ একটি ঘোড়ার মতো ভবিষ্যতের আশা? নর্দমায় লাট খেয়ে মরা? কেবল এক হোবো, আরেক জন যে গেল।

 

ডিলান যা চায় : আ মি  যা  স ত্যি ই  চা ই

তোমার সঙ্গে প্রতিযোগিতার তাল খুঁজছি না আমি, ছলনা মারামারি বা দুর্ব্যবহারও না। সরল-সোজা বানাতে চাই না, খোপে ফেলতেও না। অস্বীকার না, বিরোধ না, শহিদ বানাতেও চাই না তোমায়। যা আমি সত্যিই চাই, তা হল বন্ধুত্ব।

না, ঝগড়া করতে চাই না, ভয় দেখাতে, শুকিয়ে ফেলতে, টেনে নামাতে বা শেকলে বাঁধতেও না। তোমার রাস্তা বন্ধ করতে চাই না, ধাক্কা দিতে বা আটকে রাখতেও না। বিশ্লেষণ নয়, ছাপ-মারা নয়, সবই নির্দিষ্ট করা কিংবা তোমার বিজ্ঞাপনও নয়। যা আমি সত্যিই চাই, তা হল বন্ধুত্ব।

সাজিয়ে ছিমছাম বানাতে চাই না তোমায়। একসঙ্গে দৌড়তে, তাড়া করতে, হন্যে হয়ে খুঁজে বের করতে, অপমান করতে, ব্যাখ্যা করতে বা বাস্তুহারা বানাতেও না। যা আমি সত্যিই চাই, তা হল বন্ধুত্ব।

তোমার কোন আৱীয়ের সঙ্গে পরিচিত হতে চাই না। অযথা বনবন করে ঘোরাতে চাই না। বেছে নিয়ে খুঁটিয়ে দেখতে না, পরীক্ষা করতে না, বাতিল করতেও না। যা আমি সত্যিই চাই, তা হল বন্ধুত্ব।

তোমায় মিথ্যে বানাতে চাই না, বগলদাবা করে ছুঁড়ে ফেলতেও না। আমার মতোই অনুভব করাতে, আমার মতোই গড়ে তুলতে বা আমার চোখেই জগৎ দেখাতে চাই না তোমাকে। যা আমি সত্যিই চাই, তা হল বন্ধুত্ব।

 

অনুবাদ। দীপক মজুমদার। আত্মপরিচয়ের গান, ১৯৮৩

Leave a Reply

Shop
Sidebar
0 Wishlist
0 Cart